আফগানিস্তান থেকে তাড়াহুড়ো করে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করলে উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট বা ন্যাটোকে চরম খেসারত দিতে হতে পারে জানিয়ে সতর্ক করেছেন জোটের মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের সংঘাত কবলিত অঞ্চল থেকে শিগগিরই উল্লেখযোগ্য সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) তিনি বলেন, ‘আমরা এখন খুবই সঙ্কটপূর্ণ মুহূর্ত পার করছি। আফগানিস্তানে প্রায় ২০ বছর ধরে ন্যাটো অবস্থান করছে। ন্যাটো জোটের কোনো দেশ সেখানে দীর্ঘদিন থাকতে চায় না। কিন্তু দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারে তাড়াহুড়ো করলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
স্টোলটেনবার্গ আরো জানান, ‘আফগানিস্তান এখনও বেশ বিপজ্জনক জায়গা। দেশটিতে অবস্থান করা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা আমাদের মাতৃভূমির জন্য হুমকি। আফগানিস্তান এবং সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হারানো খেলাফত ফিরে পেতে, আবারো নিজেদের পুনঃগঠন করতে পারে’।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে অর্ধেক সেনা তুলে নেয়া হবে। বাকি ২ হাজার ৫শ’ মার্কিন সেনা দেশটিতে আপাতত থেকে যাবে। সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে এবং নির্বাহী আদেশের কাজও চলছে।
যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা তুলে নিলেও আফগান নিরাপত্তা রক্ষীদের পরামর্শ, প্রশিক্ষণসহ আনুসঙ্গিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে জানান ন্যাটো মহাসচিব। আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত আফগান নিরাপত্তা সদস্যদের অর্থায়নে ন্যাটো প্রতিশ্রুতি বলেন স্টোলটেন বার্গ।
সুতরাং ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি মেনে চলার আহ্বান জানান জোটের মহাসচিব। সময় হলে আফগানিস্তান থেকে পর্যায়ক্রমে সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া হবে মন্তব্য করেন তিনি
তালেবানদের উৎখাত করতে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবরে আফগানিস্তানে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তারা জানায়, তালেবানরা ওসামা বিন লাদেন এবং অন্য আল-কায়েদা নেতাদের লালন করেছে যারা ৯/১১ এর হামলার সাথে জড়িত ছিল। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট তালেবান শাসন উৎখাত করার পর থেকেই সেখানে আছে মার্কিন সেনা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেকদিন থেকেই সেনাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন। দেশে দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ খুবই ব্যয়বহুল এবং অকার্যকর বলে সমালোচনা করেছেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের শুরুর দিকে তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তির অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারিতে তালেবান জঙ্গি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তির শর্ত ছিল মার্কিন সেনাদের দেশে ফেরানো।
Discussion about this post