সেনা বাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ঘটনায় টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছরা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীসহ ৭ আসামিকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাপ ফারুক সময়নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, আইনে ৩০২ ধারার মতো আমলযোগ্য মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা থাকলেও ওসি প্রদীপের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। উল্টো তাকে ব্যাপক নিরাপত্তা দিয়ে কক্সবাজার কোর্টে আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের হেফাজতে থাকা ওসি প্রদীপ গ্রেপ্তার না আত্মসমর্পণ করেছে তা নিয়েও সারাদিন ছিল গুঞ্জন। আইনবিদরা মনে করেন, এর মাধ্যমে অভিযুক্তকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দিনভরই বন্ধ ছিল ওসি প্রদীপের মুঠোফোন। গুঞ্জন ছড়ায় তিনি কি পালিয়ে গেছেন? অসুস্থতার অজুহাতে প্রদীপ ভর্তি হন নিজ জেলা চট্টগ্রামের বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে। সেখান থেকে অনেকটা ভিআইপি প্রটোকলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজার আদালতে। কিন্তু তখনো গ্রেফতার বা আটক না করে তাকে ‘পুলিশি হেফাজতে’ নেবার কথা জানানো হয় গণমাধ্যমে।
নানা কারণে আলোচিত সমালোচিত ছিলেন ওসি প্রদীপ। টেকনাফে কাজ শুরু করতে না করতেই একের পর এক ক্রসফায়ার, এমনকি প্রকাশ্যে মাদককারবারিদের বাড়িতে গায়েবি হামলা ও অগ্নিসংযোগের হুমকিও দিতেন প্রদীপ।
সিনহাকাণ্ডের পর ওসি প্রদীপ আলোচনায় তো ছিলেনই, আবারও গুঞ্জন চলছে তাকে কি আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দিল পুলিশ? দেশের প্রচলিত আইন মতে, আসামি আত্মসমর্পণ করলে মামলা পরিচালনার সময় বাড়তি সুবিধা পায় সে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, অনেকের মধ্যেই ধারণা যে পুলিশ প্রদীপকে গ্রেফতার করে নাই, পুলিশ বলেছে প্রদীপ আত্মসমর্পণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, তাই আদালতে নিয়ে তাকে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে। তাহলে ভবিষ্যতে তাকে সুবিধা দেয়ার জন্য কি এসব করা হয়েছে, এটা কি আইনে আছে কিনা?
আইনজীবীরা বলছেন, সিনহা হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে হওয়া উচিত। এতে বিচার বহির্ভূত হত্যাবন্ধে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
Discussion about this post