কক্সবাজারের মহেশখালীতে তিন বছর আগে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একটি মৃত্যুর ঘটনায় টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে এই ঘটনায় পুলিশের করা মামলাটি সিআইডির’র এএসপি পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মহেশখালীর জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আব্বাস উদ্দিনের আদালত এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. হামিদুল হক।
এর আগে বুধবার (১২) একই আদালতে মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব মাঝের পাড়ার মৃত আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার বাদী হয়ে ৩ বছর আগে সংঘটিত কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় স্বামীকে হত্যার অভিযোগে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও ৫ পুলিশ সদস্যসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) আদেশের দিন ধার্য করেন।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছিল, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭ টার দিকে হোয়ানক ইউনিয়নের লম্বাশিয়া পাহাড়ি এলাকায় ‘দুই জলদস্যূ বাহিনীর মধ্যে’ কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে আব্দুস সাত্তারকে হত্যা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে পুলিশকে সহায়তা করে ‘ফেরদৌস বাহিনী’ নামের একটি ‘জলদস্যু বাহিনী’। এই ঘটনায় ওই সময় থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ।
বাদীর আইনজীবী হামিদুল হক বলেন, গত ৩ বছর আগে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আব্দুস সাত্তার নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ার কারণে ওই বছরের জুলাই মাসে স্বজনরা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এ নিয়ে রিট পিটিশন নং-৭৭৯৩/১৭ মূলে ‘ট্রিট ফর অ্যাফায়ার’ হিসেবে গণ্য করতে আদেশ দেন আদালত।
সেই আদেশের প্রেক্ষিতে নিহতের স্বজনরা (বাদীসহ) একই বছরের ১৭ জুলাই হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে লিখিত দরখাস্ত করেন। কিন্তু পুলিশ আবেদনটি আমলে নেয়নি।
বাদীর আইনজীবী বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আপিল করেন এবং তা খারিজ হয়ে যায়। এতে বাদীপক্ষকে নতুন আরেকটি রিট পিটিশন দেয়ার জন্যও আদালত নির্দেশনা দেন।
এদিকে বুধবার (১২ আগস্ট) মহেশখালীর জ্যৈষ্ঠ বিচারক হাকিমের আদালতে নিহত আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার একই ঘটনায় নতুন করে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করলে বিচারক বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) আদেশের দিন ধার্য করেন বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী হামিদুল হক।
হামিদুল বলেন, যেহেতু ঘটনাটি নিয়ে উচ্চ আদালতে বাদীর দায়ের রিট পিটিশনটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে; সেহেতু বিচারক নতুন করে দায়ের অভিযোগটি খারিজ করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ঘটনাটি নিয়ে বাদীকে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
এছাড়া কথিত বন্দুকযুদ্ধে আব্দুস সাত্তার নিহত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতের পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলাটি (৩৭/২০১৭) একজন এএসপি পদ মর্যাদার কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করার জন্যও আদালত আদেশ দেয়া হয়েছে।
Discussion about this post