চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চেংগদুতে অবস্থিত কনস্যুলেট বন্ধের জন্য মার্কিন দূতাবাসকে নির্দেশ দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৪ জুলাই) চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিসিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে। দুই দেশের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র হিউস্টনে চীনা কনস্যুলেট বন্ধের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এই নির্দেশ দিলো বেইজিং।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অযাচিত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও বৈধ প্রতিক্রিয়া। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি বেইজিং দেখতে চায় না। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সব দায় যুক্তরাষ্ট্রের।
এর আগে ২২ জুলাই টেক্সাসে অবস্থিত চীনের কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের (২৪ জুলাই) মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকরের বাধ্যবাধকতা দিয়েছে মার্কিন সরকার। তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এ সিদ্ধান্তকে আপত্তিজনক এবং অন্যায় বলে মন্তব্য করেন। এটিকে রাজনৈতিক উস্কানি বলে উল্লেখ করেছে চীন। যদিও নিজেদের মেধাস্বত্ব রক্ষায় এটি একটি পদক্ষেপ বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে, ২১শে জুলাই চীনের কনস্যুলেট চত্বরে কিছু নথি পুড়িয়ে দেয়ার ভিডিও প্রকাশ পায়। ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন ব্যক্তি কনস্যুলেট চত্বরে কিছু নথি পুড়িয়ে দিচ্ছে। সেখানকার কর্মকর্তারা বহু নথিপত্র পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর পরপরই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কনস্যুলেটটি বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। এতে বলা হয়, ‘আমেরিকান ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টিকে সুরক্ষিত রাখার স্বার্থে’ এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত কুই থিয়ানকাই বলেন, ‘হুয়াওয়ে আন্তর্জাতিক এবং চীনের স্থানীয় আইনকানুন মেনে চলে। তারা নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য সব দেশের আইনকানুনের প্রতিও, যেসব দেশে তারা ব্যবসা করে থাকে। তারা (হুয়াওয়ে) আন্তর্জাতিক আইন মেনে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি এবং পণ্যের মান উন্নয়ন করছে। তাদের কার্যক্রমে আমরা উৎসাহ দেই, সমর্থন করি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কি হয়েছে আমার বোধগম্য নয়। তারা হুয়াওয়ের উন্নয়নকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। তাদের অবস্থান সম্পূর্ণভাবে আইন এবং বাজার ব্যবস্থার রীতি-নীতির সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক।’
চেংডুতে মার্কিন কনস্যুলেট প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। এখানে ২ শতাধিক কর্মী রয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসন বেশ কয়েকটি ইস্যুতে চীনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে। এসব ইস্যুর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, করোনাভাইরাস মহামারি ও হংকংয়ের বিতর্কিত নতুন নিরাপত্তা আইন। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত আরও চীনা কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
Discussion about this post