সাবরিনা বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রমণের পরপরই মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সমাজসেবামূলক সংগঠন “মতিঝিল মডেল এক্স-স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন” সংক্ষেপে MMEXSA (মেক্সা) নানাবিধ কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে এসেছে। শুরুতেই MMEXSA – Fight Covid 19 এর ব্যানারে MMEXSA Doctors Panel গঠন করে। এই ডক্টরস প্যানেলে রয়েছেন চিকিৎসা শাস্ত্রের ২০টি ভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ৬৩জন স্বনামধন্য চিকিৎসক যারা প্রত্যেকেই মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। স্কুলের বর্তমান শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থী এখন টেলিফোনের মাধ্যমে তার পছন্দমতো চিকিৎসকের নিকট থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। ডাক্তারগণও সার্বক্ষনিক স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করে চলেছেন। এভাবে করোনা ক্রান্তিকালের শুরু থেকেই মেক্সা’র পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় মেক্সা এগিয়ে এসেছে সেইসব ভাইবোনদের জন্য যাদের এই মুহুর্তে জরুরী সহায়তা প্রয়োজন। এলক্ষ্যে মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকমন্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী যাদের সাহায্য দরকার, তাদের সহ দেশের যেকোনো প্রান্তে দুরাবস্থায় থাকা মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য “বন্ধুতায় মেক্সা” নামে একটি কার্যক্রম এই এসোসিয়েশনের মাধ্যমে হাতে নেয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় সমাজের যে সকল মানুষ হঠাৎ করেই এসময়ে বিপদাপন্ন হয়েছেন এবং কারও কাছে হাত পাততেও পারছেন না, তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে মেক্সা। এই কার্যক্রমে শুধু খাদ্যদ্রব্যই নয়, প্রয়োজনীয় ঔষধও দূর্গতদের দ্বারগোড়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। মেক্সা’র প্রাথমিক টার্গেট ৭,০০০ পরিবারকে উপহার সামগ্রী প্রদান করা। ইতিমধ্যেই ২,৩০০ পরিবারকে উপহার পৌঁছে দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই কার্যক্রম করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে মর্মে মেক্সা জানিয়েছে। এছাড়াও ‘বন্ধুতায় মেক্সা’র ব্যানারে মানিকনগর, মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁও এলাকার যে সকল মাদ্রাসা ও এতিমখানায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ছিল সেসব প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার নিম্ন মধ্যবিত্ত ও বিত্তহীন কিছু কিছু পরিবারকে তাদের বাসায় ইফতার পৌঁছে দিয়েছে প্রতিদিন। ১৫ রোজা থেকে ২৬ রোজা পর্যন্ত দিনে ৪০০/৫০০ জনের জন্য ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এভাবে ৫ সহস্রাধিক পরিবারের হাতে ইফতার সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে মেক্সা। হত-দরিদ্র পরিবার সনাক্ত করা ও তাদের বাসায় ইফতার পৌঁছানোর ব্যাপারে ঐ এলাকায় বসবাসরত এক্স মডেলিয়ান ভাইয়েরা এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা করছেন। বর্তমানে সরকারীভাবে কোভিড ১৯ টেস্টের সংখ্যা সীমিত আকারে হওয়াতে টেস্টের যায়গাগুলোতে রুগীদের ভীড় লেগেই থাকে। সকাল থেকে সবাইকে লাইন দিতে হচ্ছে টেস্টের জন্য। সমস্যা হচ্ছে যারা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন তারা আবার মোটামুটিভাবে সবাই কোভিড ১৯ সাসপেক্টেড পেসেন্ট। যার কারনে জরুরী হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই টেস্ট করাতে ঘরের বাইরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় ‘মেক্সা’ মডেল পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সীমিত আকারে এই সেবাটি দেয়া শুরু করেছি। খিলগাঁও সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার দৈনিক ৫-৭ জন করে কোনোরকম ভীড় ছাড়া এবং অর্থ কড়ি ছাড়া মডেল পরিবারের জন্য কোভিড ১৯ টেস্ট করানোর ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তা প্রার্থীদের জন্য একটি গুগল ফরম তৈরী করা হয়েছে। ফরমটি পূরণ করে মেক্সা সদস্যরা স্বপরিবারে এ সেবাটি গ্রহণ করতে পারছেন। এখন পর্যন্ত মডেল পরিবারের ১৭০ জন সদস্যের টেস্ট করাতে সক্ষম হয়েছি আমরা। সমাজের এই ক্রান্তিলগ্নে এক্স মডেলিয়ান হিসেবে স্কুল, দেশ ও জাতির জন্য আমরা আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব করার চেস্টা করছি। আমরা জানি, জাতির এই দূর্যোগের সময় আপনিও ঘরে বসে থাকবেন না। আপনার সাহায্য নিয়ে আপনিও এগিয়ে আসুন মহৎ এই উদ্যোগের পথে সাথে চলার জন্য।
Discussion about this post