আম্পান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং ওডিশ্যা প্রদেশের দিকে আরও অগ্রসর হওয়ায় দেশটির আবহাওয়া দফতর বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। এ দুই রাজ্যে আম্পানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা জানানো হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, ২০শে মে আম্পান পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে দিয়ে খুবই মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় আকারে বয়ে যাবে। তবে যে গতিতে ওই ঝড় এগিয়ে আসছে তা উপকূলে আছড়ে পড়ার আগে, এর তীব্রতা কিছুটা কম হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের মতে, এই ঝড়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা। আমফানের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি এবং নদিয়া জেলার। কাঁচা ঘর, পুরনো পাকা বাড়ি, উড়ন্ত জিনিস, রেল ও সড়ক যোগোযোগ, ফসল, বাগান, নারকেল গাছ সহ সব ধরনের বড় গাছ, বড় জাহাজ, নৌকা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে। এদিকে, ওড়িশায় এই ঝড় মূলত জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, জাজপুর, ময়ূরভঞ্জ এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাবে।
পশ্চিমবঙ্গে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে রাজ্যের ৩ লক্ষ মানুষকে। তাদের মধ্যে ২ লক্ষ মানুষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার। বাকিদের মধ্যে উত্তর-২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৪০ হাজার ও ১০ হাজার।
এদিকে, সবাইকে বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুর্যোগ কেটে যাওয়া পর্যন্ত বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সারা রাত নিজের অফিসেই থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর এনডিটিভির।
এই সুপার সাইক্লোনে বৃহৎ আকারে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অফিস। সোমবার এটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল এবং মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত এটি পারাদ্বীপের ওড়িশা উপকূল থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে এবং রাজ্যের দিঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
গত দুই দশকে বঙ্গোপসাগরের উপর দ্বিতীয় সুপার সাইক্লোন হতে চলেছে। বুধবার যখন এটি রাজ্যে আঘাত করবে, আমফানের গতি থাকবে ১৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
আবহাওয়া অফিস মঙ্গল ও বুধবার বাংলা ও ওড়িশার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। উপকূলীয় ওড়িশায় ইতিমধ্যেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে যা আজ রাতের মধ্যে আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিকিম, অসম এবং মেঘালয়ের অংশেও আগামীকাল এবং বৃহস্পতিবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার সমুদ্রের দিকে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
Discussion about this post