আজহারুল ইসলাম সাদীঃ বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা কর্মহীনতায় খাদ্যভাবে মানবেতর জীবনযাপন করে চলছে।
সমাজের অধিকাংশ মানুষের খাদ্যভাবাব নিরসনে সরকার তথা সমাজের বিভিন্ন বিত্তশালী ব্যাক্তিরা সহায়তায় এগিয়ে এসেছে,
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই যে,
খাদ্যভাবে আমাদের আশপাশে থাকা অভুক্ত অবলা কুকুর গুলো কি খাচ্ছে? তারা তো বোবা! কথা বলতে পারে না? তাহলে কিভাবে তারা তাদের আহারের উপায় খুঁজে নেবে?
কিভাবে তারা তাদের খাবার জোগাড় করবে?
বিষয় টি কেউই না ভাবলেও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দুই শিক্ষার্থীর এমন মানবিক চিন্তা থেকেই তারা গত কয়েকদিন ধরে সাতক্ষীরা শহরের নারকেলতলা, জজকোর্টর সামনে, খুলনারোড, নিউমার্কেট চত্বর, সংগীতা ও হাটের মোড় সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে কুকুরদের রাতের খাবারের ব্যবস্থা করে চলেছেন।
এই দুই শিক্ষার্থীর একজন হলেন, আরিফ হোসেন। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মধ্য কাটিয়ার দরিদ্র পিতা শহিদুল ইসলাম এর ছেলে সে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থী এবং একজন সক্রিয় ডোনার।
আরেকজন আসিফ হোসেন, কলারোয়া সরকারি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে সদ্য অনার্স পাশ করা শিক্ষার্থী। এমন সুন্দর উদ্যোগের কারনে তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাতক্ষীরা সদরের নলকুড়া গ্রামের মরহুম শেখ আব্দুল মালেক এর বড় ছেলে ও ঘোনা ইউনিয়নের বহুমুখী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ( ইংরেজি) শেখ মাসুদুল হাসান।
তাঁরা প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা শহরের উপরোক্ত মোড়গুলির শতাধিক অবলা কুকুরদেরকে রান্না করা খেঁচুড়ি পরিবেশন করে আসছে।
তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই আর্থিক ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। যেসব ব্যক্তিরা তাদের কাজে সাহায্য সহযোগিতা করেছে, তাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল আলম, শর্মিতা দেবনাথসহ নাম না জানা আরো কয়েকজন অর্থ সহায়তা করে চলেছেন বলে জানা গেছে।
বর্তমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের ফলে অধিকাংশ খাবার হোটেল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আর তাই শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলো অভুক্ততায় ক্ষিপ্ততায় দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
কিছু কিছু এলাকার ক্ষুধার্ত কুকুর গুলি গোয়াল ঘরে বা ছাগলের খুপরিতে আক্রমণ চালিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে চলছে।
তবে আশার কথা হল,জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে স্বল্প পরিসরে কিছু ইফতার সামগ্রী বিক্রির দোকান শর্তে সাপেক্ষে খোলার ইজ্ঞিত দেয়ায় কিছু কুকুর তাদের খাদ্যভাব মিটাতে পারবে বলে আস্বস্ত হওয়া যাচ্ছে।
আরিফ ও আসিফ আরো বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে মানুষ মানুষের দিকে সহমর্মিতার হাত বাড়াচ্ছে কিন্তু রাস্তার ধারে এই বোবা প্রাণীদের অভুক্ততার কথা কেউ ভাবছেনা? আর তাই আমরা নিজ উদ্যোগে এই বোবা প্রাণিদের অন্তত এক বেলা আহার করানোর চেষ্টা করছি মাত্র।
যদি আমাদের কাজের সাথে কোন সহৃদয় ব্যক্তিগণ সমন্বয়ক হতে চান তারা এগিয়ে আসতে পারেন।
Discussion about this post