ADVERTISEMENT
বছরের একেবারে শুরুর দিনই নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর আসে বিশ্ব সংবাদমাধ্যমে। শুরু হয়েছিল চীনের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য হুবেইয়ের উহান শহর থেকে। মাত্র চার মাসে একের পর এক রাষ্ট্র হয়ে বিশ্বজুড়ে মহামারী হয়ে দেখা দিয়েছে প্রাণ সংহারক ভয়াবহ এই ভাইরাস। কিন্তু তার মধ্যেও বাদ পড়েছে বেশ কিছু দেশ। যেসব দেশে এখন পর্যন্ত একজনও করোনা সংক্রমিত রোগীর সন্ধান মেলেনি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যাসহ বিভিন্ন তথ্যপরিসংখ্যান দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের হিসাবে ১৮৫টি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আর বাকি দেশগুলি করোনামুক্ত। এর মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্রগুলোই বেশি। এছাড়া চীনের প্রতিবেশি দুই দেশ, আফ্রিকার একটি ও ভারত মহাসাগরে একটি দ্বীপ রাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কয়েকটি দেশ রয়েছে।
করোনার সংক্রমণহীন দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় দেশ উত্তর কোরিয়া। বাকি দেশগুলির অধিকাংশই আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে ছোট। ফলে ছোট দেশ বলে অনেকেই গুরুত্ব দিতেন না যে সব দেশকে, তারাই এখন সবচেয়ে নিরাপদ।
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনার প্রকোপ ছড়িয়েছিল। কিন্তু ব্যাপক হারে টেস্টিং ও চিকিৎসার মাধ্যমে তড়িঘড়ি নিয়ন্ত্রণে এনে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আর তারই প্রতিবেশী এবং এক সময় একসঙ্গে থাকা দেশ উত্তর কোরিয়ায় সংক্রমণ ছড়ায়নি। ২ কোটি ৫৫ লক্ষ জনসংখ্যার পূর্ব এশিয়ার এই দেশে একজনও করোনা
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। হাওয়াই ও ফিলিপাইনের মাঝে এই দ্বীপরাষ্ট্রের লোকসংখ্যা মাত্র ৫৮ হাজারের কিছু বেশি। বলয়াকৃতির দ্বীপে এক জনের শরীরেও করোনাভাইরাসের জীবাণু নেই।
৮ লাখের কিছু বেশি মানুষের বাস কমরোসে। ভারত মহাসাগরের মোজাম্বিক প্রণালির অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্ট পূর্ব আফ্রিকার এই দ্বীপপুঞ্জেও করোনা প্রবেশ করতে পারেনি।
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দেশ কিরিবাতি। মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপরাজ্যের জনসংখ্যা মাত্র ১ লক্ষ ১৬ হাজারের মতো। এখানেও করোনার জীবাণুর সন্ধান মেলেনি। ৩২টি বলয়াকৃতি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দেশ।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকশো দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত দেশের জনসংখ্যা সাড়ে ৬ লক্ষের কিছু বেশি। একজনও করোনা আক্রান্ত নেই।
মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বের দেশ নাউরু। এখানেও সমুদ্রতটের সৌন্দর্য মনোরম। সমুদ্রের অভ্যন্তরে প্রবালে ভরা, আর উপকূলে পাম গাছের সারি। মাত্র সাড়ে ১২ হাজার জনসংখ্যার দেশেও ঢুকতে পারেনি করোনাভাইরাস।
দেশটির নাম সামোয়া। জনসংখ্যা দু লাখেরও কম। ‘লাপিতা’জনজাতির মানুষজন প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে আবিষ্কার করেন সামোয়া দ্বীপ এবং সেখানেই বসবাস শুরু করেন। এখানরকার জনসংখ্যা দুই লাখেরও কম। করোনাভাইরাসের প্রবেশ ঘটেনি এখানেও।
পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় ৬০০টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গড়ে ওঠা দেশ মাইক্রোনেশিয়া। চারটি প্রদেশও রয়েছে। পামগাছ বিস্তৃত সমুদ্রসৈকতের জন্য বিখ্যাত এই দেশ। মাত্র ১ লাখ ১৩ হাজার মানুষের মধ্যে একজনও করোনা সংক্রমিত হননি।
কোভিড-১৯ প্রবেশ করতে পারেনি মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলের আরও একটি দেশ পালাউতেও। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রায় ৫০০ দ্বীপের সমাহার পালাউ। জনসংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার।
মধ্য এশিয়ার ছোট্ট দেশ তাজিকিস্তান। চার দিকে ঘিরে রয়েছে আফগানিস্তান, চিন, কিরঘিজস্তান ও উজবেকিস্তান। চিনের সঙ্গে ভূখণ্ডের সীমান্ত থাকলেও ৯১ লাখ জনসংখ্যার এই দেশে করোনার সংক্রমণ নেই এক জনের শরীরেও।
১ লাখের কিছু বেশি মানুষের বাস পলিনেশিয়া অঞ্চলের দীপরাষ্ট্র টোঙ্গা-তে। এখানেও কোনও করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলেনি।
মধ্য এশিয়ার অন্য দেশ তু্রকমেনিস্তান। কাস্পিয়ান সাগর দিয়ে ঘেরা এই দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলই কারাকোরাম মরুভূমির অন্তর্গত। জনসংখ্যা সাড়ে ৫৮ লাখের মতো। এখানে করোনার সংক্রমণ ঢুকতে পারেনি।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ টুভালুতে করোনার সংক্রমণ নেই। ব্রিটিশ কমনওয়েলথ-এর অধীন স্বাধীন এই দ্বীপরাষ্ট্রের জনসংখ্যা সাড়ে ১১ হাজারের কিছু বেশি।
১৩০০ কিলোমিটারের মতো বিস্তৃতি। তার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৮০টি ছোট ছোট দ্বীপ। এমনই উপকূলীয় দেশ ভানুআটু। এখানে প্রবাল পাথরের সমুদ্রতলে স্কুবা ডাউভিং-এর জন্য বিখ্যাত। জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখের কাছাকাছি। এখানেও এখনও এক জনের শরীরেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি।
আফ্রিকার দেশ লেসোতো। ছোট্ট ভুখণ্ডের উচ্চ অক্ষাংশের এই দেশটির অভ্যন্তরে জালের মতো বিছিয়ে রয়েছে প্রচুর নদী-নালা। দেশটির জনসংখ্যা ২১ লাখের কিছু বেশি। এখানেও করোনা থাবা মেলতে পারেনি।
সূত্র: ঢাকাটাইমস
Discussion about this post