যশোরের চৌগাছায় তিন নারী ও দুই শিশুসহ ৩৮ ইটভাটার শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। আজ শনিবার আজমীরী কার্গো সার্ভিসের একটি কার্গোতে করে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যাওয়ার পথে চৌগাছায় স্থানীয়দের হাতে তারা আটক হন।
যশোর শহরে ঢুকতে না পারায় বাইপাস হয়ে চৌগাছা শহর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কার্গোটির চালক মিলন। আটককৃতরা ময়মনসিংহের ত্রিশালের বালিপাড়া ইউনিয়নের একটি ইটভাটার শ্রমিক।
জানা গেছে, শনিবার সকাল ৭টার দিকে চৌগাছা শহরে পৌঁছলে কার্গোর মধ্যে থাকা একজন মানুষের কথার শব্দে ও কার্গোটির পেছন দিক সামান্য খোলা থাকায় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান অ্যাডমিরালের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক সেটি আটক করেন। আটকের পর কার্গোর মধ্যে ঠাসাঠাসি করা ৩৮ জন মানুষ দেখে স্থানীয়রা মারমুখি হয়ে ওঠে।
পরে চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও চৌগাছা থানার এসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ ব্যাপারে চৌগাছা পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, তারা ময়মনসিংহের ত্রিশালের বালিপাড়া ইউনিয়নের একটি ইটভাটা শ্রমিক। একটি কার্গোতে করে সাতক্ষীরার শ্যমনগর উপজেলার কাশিবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে যাচ্ছিল। সকালে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান অ্যাডমিরালের নেতৃত্বে ওই কার্গোটিকে স্থানীয়রা আটকে দেয়।
তিনি বলেন, ‘কাশিবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ এবং ত্রিশালের বালিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ বাদলের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। ওরা যেন নিজেদের বাড়িতে পৌঁছতে পারে। ইউএনও জাহিদুল ইসলাম, থানার ওসি রিফাত খান রাজীবের সঙ্গে কথা বলে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
‘কথা বলার পর শ্রমিকরা ময়মনসিংহ থেকে আসছেন এবং শ্যমনগর যাবেন এটা নিশ্চিত হয়ে চৌগাছার ইউএনও এবং ওসির সাথে পরামর্শ করে ওই শ্রমিকদের তাদের গ্রামে পাঠানো নিশ্চিত করেন। পরে বেলা ১০ টার দিকে তিনিসহ পুলিশ শ্রমিক বোঝাই ওই কার্গোটিকে চৌগাছার সীমানা পার করে দিয়ে আসেন’ যোগ করেন চৌগাছা পৌর মেয়র।
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, কার্গোতে থাকা শ্রমিকদের সর্দার আরিফুল ইসলামসহ তারা ছয় ভাই রয়েছেন। তাদের বাড়ি ওই ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ত্রিশালের বালিপাড়া থেকে শুক্রবার রাতে নারী ও শিশুসহ ৩৮ শ্রমিক সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিবাড়ি ইউনিয়নের বিভন্ন গ্রামে যাচ্ছিলাম। ১০ দিন আগে আমাদের ভাটা মালিক ভাটা বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রায় সাত দিন ধরে আমরা না খেয়ে জীবনযাপন করছিলাম। অতঃপর ভাটা মালিকের পরামর্শে এই কার্গোতে করে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’
Discussion about this post