পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করেই ভারত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে করোনাকালীন বাংলাদেশে চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত জরুরি অক্সিজেনের আমদানি। গত চার দিনে কোনো অক্সিজেনবাহী গাড়ি আসেনি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের শুধু বাণিজ্যিক সম্পর্ক না। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সূত্র ধরে এই ক্রান্তিকালে সীমিত পরিসরে হলেও দেশটি অক্সিজেন রফতানি সচল রাখবে।
জানা যায়, দেশের চিকিৎসা খাতে অক্সিজেনের চাহিদার বড় একটি অংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। প্রতি মাসে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়েই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়ে থাকে। করোনাকালীন সময়ে আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে সম্প্রতি এ অক্সিজেনের চাহিদা আরও বাড়ে।
কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি। আমদানিকারকের প্রতিনিধিরা ভারতীয় রফতানিকারকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছেন, ভারতীয় অক্সিজেন রফতানি বন্ধে তাদের চাপ রয়েছে। তাই ভারতে ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা ভেবে বাংলাদেশে অক্সিজেন রফতানি সাময়িক বন্ধ করেছে বলে জানা গেছে।
হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ হয়ে পড়ায় যেমন ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তেমনি দেশে চিকিৎসা খাতও বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়লো।
অক্সিজেন পরিবহনকারী বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা জানান, গত চার দিন ধরে বেনাপোল বন্দরে ট্রাক নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ভারত থেকে কোনো অক্সিজেন বন্দরে ঢুকছে না।
অক্সিজেন আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ রাকিব হোসেন জানান, ভারতীয় রফতানিকারকেরা তাদের জানিয়েছেন সংকটের কারণে তারা বাংলাদেশে অক্সিজেন রফতানি করতে পারছেন না। এছাড়া রফতানি না করার বিষয়ে ভারত সরকারেরও কিছুটা চাপ রয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসেসিয়েশনের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দীন শিমুল জানান, বাংলাদেশে চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রায় সবকিছুই আসে ভারত থেকে। হঠাৎ বন্ধে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে আমরা আশা করছি বন্ধুত্বের সূত্র ধরে ভারত সরকার করোনার এ সময়ে অল্প হলেও বাংলাদেশে অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সবশেষ ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের দু’জন আমদানিকারকের নামে ৯৩ মেট্রিক টন অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়। প্রতি মেট্রিক টন অক্সিজেনের আমদানি মূল্য ছিল ১১৬ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ৯ হাজার ৯৭৬ টাকা।
Discussion about this post