দশমিনা প্রতিনিধি: মরনব্যাধী করোনার সংক্রমণ এড়াতে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। সরকারের এ সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে স্থানীয় প্রশাসন। তবে এসব নির্দেশনা পালনে একটু বেশি তৎপর ও আন্তরিকতা দেখা গেছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌসকে। একজন নারী কর্মকর্তা হয়েছেও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে চলছেন উপজেলার এ প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। জনগণকে সচেতন করা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নিন্ম আয়ের মানুষের খোঁজ-খবর রাখছেন তিনি। এরই মধ্যে তাঁর এসব কর্মকান্ডের কারণে ‘মানবিক নারী’ ইউএনও হিসেবে আখ্যা পেয়েছেন দশমিনা উপজেলাবাসীর কাছে। উপজেলার সব মহলে তিনি এখন ‘মানবিক’ এক নারী হিসেবে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। অনেকের মতে, প্রশাসনিক অন্যান্য পুরুষ কর্মকর্তার চেয়ে নারী কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর কর্মকান্ড প্রশংসনীয় এবং দৃশ্যমান। জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্নস্থানে ছুটে চলছেন তিনি। কোথাও কোন রকম আইনের ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন অমাণ্যকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাও করছেন তিনি। ইতোমধ্যে হোম কেয়ারেন্টাইন আইন ভঙ্গকারী প্রবাসীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন। করোনা ভাইরাসকে পুঁজি করে অসাধু বিক্রেতাদের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার কারনে মোবাইল কোর্টের উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাজার নজরদারি করে জরিমানাও করেছে অসাধু দোকানীদের বিরুদ্ধে। এদিকে, ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে হাট বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ রাখর ঘোষণা দেয় সরকার। এতে বিপাকে পড়ে নিন্ম আয়ের মানুষ। তাদের কথা চিন্তা করে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন মানবিক এ কর্মকর্তা। নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজ হাতে অসহায়দের মাঝে তুলে দিয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, হাট-বাজার বন্ধ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাদের একজনের রোজগারে পুরো পরিবার চলতো। এখন তাদের উপার্জন বন্ধ। এ জন্য সাধ্য অনুযায়ী আমি তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। অন্যদিকে, মরনব্যাধী এ অদৃশ্য ঘাতকের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন থাকতে তাঁর অফিশিয়াল ফেইসবুক পেজেও বিভিন্ন পরামর্শ দেন তিনি। গত শুক্রবার তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বলেন সুপ্রিয়, দশমিনা উপজেলাবাসি! আপনাদের বিনীতভাবে জানাতে চাই,আপনারা অযথা,অকারণে, অপ্রয়োজনীয় কাজে বাইরে ঘুরাঘুরি করবেন না।নিজে বিপদে পড়ে অন্যকে বিপদগ্রস্ত করবেন না।নিজের আপনজনদের সংক্রমিত করবেন না।আপনার একটু সচেতনতাবোধ,উদারতাবাদ, সংযমিতা আপনার পরিবার,আপনার সমাজকে রক্ষা করবে।রাষ্ট্র নিরাপদ থাকবে।এই যে দিনরাত প্রশাসন, পুলিশ, আর্মি,সর্বনিকটতম জনপ্রতিনিধিরা আপনাদের ভালো রাখার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছে, সচেতন করছে তারা কি পরিবারের বাহিরের কেউ,সমাজের বাহিরের কেউ?মোটেই না।আপনাদের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে এই শ্রেনীর মানুষ রয়েছেন সবথেকে ঝুঁকি তে।তারপরও দেশের স্বার্থে, আপনাদের সুরক্ষার জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।আপনারা একটু সহযোগিতা করুন,আপনারাই নিরাপদ থাকবেন।আজ অভিযান চালিয়ে দেখলাম আপনারা কেউই কথা শুনছেন না,এক জায়গা থেকে আরেক যায়গা গেলেই দ্বিগুণ উৎসাহে আবার সমবেত হচ্ছেন। এটাই উৎকন্ঠার বিষয়।এই অজানা অদৃশ্যশত্রু এই পরিবেশের জণ্য মুখিয়ে থাকে।একজনের থেকে হাজারজন ছড়াতে এটাই মোক্ষম উপায়। সর্বশেষ আবারো নিরুপায় হয়ে অনুনয় করছি দয়া করে আপনারা বাহিরে আসবেন না,মনে রাখবেন আপনাদের জন্য আমরা বাহিরে আছি। আমাদের জন্য আপনারা ঘরে থাকুল , আল্লাহ আমাদের হেফাজতে রাখুন। সকলে ভালো থাকবেন , অন্যকেও ভালো রাখবেন।
Discussion about this post