বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছিলেন সেফারুল ইসলাম (২৫) নামের এক যুবক। ঘটনা জানার পর তার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে নানা দেনদরবার করেন ভুক্তভোগীর বাবা। কিন্তু কাজ হয়নি। সেফারুল বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা। গত তিন মাস আগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
তিন মাস আগে মামলা হলেও মেয়ের বিয়ে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ভুক্তভোগীর বাবার। তিন মাস পর দুই পরিবার ঘটনাটি নিয়ে সমোঝোতায় বসেন। গতকাল শুক্রবার সমোঝোতা হলে রাতে বিয়ে হয় সেফারুল ও ভুক্তভোগীর। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরের বিনিময়ে সেফারুল ও ভুক্তভোগীর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিয়ে নিয়ে উপজেলার ফতেখাঁ গ্রামে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে মামলা থেকে বাঁচতে ছেলেপক্ষ স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহায়তায় মেয়েপক্ষকে বিয়েতে রাজি হতে বাধ্য করেছে বলে জানান স্থানীয়রা। জানা গেছে, বিয়েতে ১০ লাখ টাকা দেনমোহর কাবিনের জন্য নির্ধারিত হলেও নগদ ১ হাজার ৫০০ টাকা ছাড়া পুরো অর্থ বাকি রেখেছে সেফারুলের পরিবার।
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ফতেখাঁ কারামতিয়া দাখিল মাদরাসার এক দাখিল পরীক্ষার্থীর সঙ্গ উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কর্পূরা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সেফারুল ইসলামের পূর্ব পরিচয় ছিল। সেই সূত্র ধরে সেফারুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন ওই যুবক। পরে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বাবা বাদী হয়ে গত ১৯ মে রাজারহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যা তদন্তাধীন রয়েছে।
বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের বিবাহ নিবন্ধক (কাজি) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাতে দুই পরিবার ও রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সহরাওয়ার্দী বাপ্পি, ঘড়িয়ালডাঙা ইউপি চেয়ারম্যান, উলিপুরের দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুস সালামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয় সেফারুল ও ভুক্তভোগীর। বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে। রাতেই মেয়েটিকে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্যদের কল করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার বলেন, ‘এক ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে হয়েছে শুনেছি। দুই পরিবারের সমোঝোতার ভিত্তিতে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। ধর্ষণের ঘটনায় যেহেতু আগে মামলা হয়েছে এবং সেটি আদালতে বিচারাধীন। এ ব্যাপারে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
Discussion about this post