সৈয়দ আমানত আলীঃ
ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার শ্রীরামপুর গ্রামে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে মহিলাসহ ৬ জনকে আহত ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা।আহতরা হলেন,মোঃলিটন মিয়া(৪২),মোঃটুলু মিয়া(৫০),মোঃরিপন মিয়া(৩৬),রাব্বি মিয়া(১৭),রোকসানা খানম(৩২) ও চম্পা বেগম(৩০)।এসময় মো:লিটন মিয়া ও তার বড় ভাই টুলু মিয়া গুরুতর আহত হয়।পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করলেও মামলা নেয়নি পুলিশ।আসামীরা হলেন মো:কামরুল ইসলাম(৪৫),শহীদুল মৃধা(৫০),লিয়াকত মৃধা(৪০),মুনশাদ মৃধা(২০),জুয়েল মৃধা(৩৫),সোহেল মৃধা(৪২),রানা মোল্লা(৩০) ও শওকত মৃধা(১৯)।
আহত লিটন মিয়া জানায়,শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) আমাদের বাড়ীতে একটা বৌভাতের অনুষ্টান ছিল।অনুষ্টান শেষে রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলাম।আসামীদের মহিনউদ্দিন মৃধার সাথে জমি জমা নিয়া বিরোধ চলে আসতে ছিল।তাদের সাথেই জমির মাপ চলছিল।আমাকে কামরুল ইসলাম বলে তোদের জমির মধ্যে আমাদের ৮ ফুট ঢুকে গেছে।আমি একথার প্রতিবাদ করলে শহীদুল মৃধার হুকুমে কামরুলের হাতে থাকা শাবল দিয়া আমাকে পিটাইতে থাকে। এর আমি পড়ে গেলেও আমাকে পিটাইতে থাকে।পরে আমার ভাইয়েরা এগিয়ে এলে আমার বড় ভাইকে রাম দা দিয়ে কোপ দিলে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার হাতে কোপ লাগে।এরপর আমার স্ত্রী ও ভাই বাতিজারা এগিয়ে গেলে তাদের ও কিলঘুষি মারতে থাকে।তারা আমাদের বাড়ীর উপর ইট মারতে থাকে।এর পর আমার স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রী গলায় থাকা দুটি চেন নিয়ে যায়।আমাদের চিৎকারে আসে পাশের লোকজন আসলে তারা চলে যায়।পরে আমাদেরকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী খুশী বেগম জানায়,মৃধা গোষ্ঠীর লোকেরা মহিউদ্দিন মৃধার সাথে জমি মাপা মাপি করছিলেন।লিটন ভাইকে কামরুল ডাক দেয় বলে তোমাদের মধ্যে জমি ঢুকে গেছে।এ কথা বলার পর লিটন ভাই বলে আমাদের মধ্যে কোন জমি ঢোকে নাই।একথা বলার সাথে সাথে কামরুলের হাতে থাকা শাবল দিয়া লিটন ভাইকে পিটাইতে থাকে।পরে লিটন ভাই মাটিতে পড়ে যায়।এরপর তার বড় ভাই ও তাদের স্ত্রীগন এগিয়ে গেলে তাদেরও পিটাইতে থাকে।রাম দা দিয়া কোপ দিতে ধরলে হাত দিয়া ঠেকাতে গেলে বড় ভাইয়ের হাতে কোপ লাগে।এরপর তারা বাড়ীর উপর ইটপাটকেল মারতে থাকে।পরে খবর পেয়ে পুলিশ আসে।
অভিযোগে যাদের নাম এসেছে তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আহত আরেকজন মোঃটুলু মিয়া জানান,আমি শুনেছি মানুষ ভাইয়ের সামনে ভাইকে মারে কিন্তু কোন দিন দেখিনি আমার ভাইকে তারা যেভাবে পিটানো শুরু করেছিল তাতে আমার ভাই মারা যেতে পারত।আমাকে রাম দা দিয়ে কোপ দিতে গেলে আমি হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে আমার হাত কেটে যায় এতে আমার হাতে ৮ টি সেলাই লাগে।আমি প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।
থানায় অভিযোগকারী রোখসানা খানম জানায়,তাদের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই কিন্তু কি কারনে আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে মারপিট করল সেটা বুঝতে পারলাম না।যেভাবে তারা মেরেছে তাতে আমার স্বামী ও ভাসুর মারা যেতে পারত।আমার স্বামী ও ভাসুর হাসপাতালে ভর্তি আছে।
আমাদের দুজনের স্বর্নের দুটি চেন নিয়া গেছে।আমাদের ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়েছে।থানায় মামলা করার জন্য অভিযোগ দিয়েছি।এখনও মামলা নেয়নি পুলিশ।বলছে আগে মেডিকেল রিপোর্ট লাগবে তারপর মামলা হবে।এমন কথা আগে কখনও শুনিনি।এখন আমরা থানায় অভিযোগ করায় বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা(ওসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান,আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই।আমরা রোকসানা খানমের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি।বাদী বিবাদী দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে।যদি আপস হয় তাহলে আপস মিমাংসা করা হবে অন্যথায় মেডিকেল রিপোর্ট পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার(এসপি) মোঃআলিমুজ্জান জানান,আমি ঘটনাটি জানার সাথে সাথে কনট্রোলে জানিয়ে দিয়েছি এবং আলফাডাঙ্গা থানার ওসিকে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।
Discussion about this post