একুশে বইমেলা থেকে বই দুটি সরিয়ে নিতে বাংলা একাডেমি মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বই দুটির নাম ‘দিয়া আরেফিন’ এবং ‘দিয়া আরেফিন’র নানীর বাণী’, লেখক দিয়ার্ষি আরাগ নামের এক ব্যক্তি যিনি মূলত ব্লগ ও ফেসবুকে
লেখালেখি করেন। বই দুটি প্রকাশ করা হয়েছে সৃষ্টিঘর প্রকাশনা থেকে।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আজহারুল্লাহ ভূঁইয়া বই দুটিতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী ও বিদ্বেষমূলক বিষয় নিয়ে রচিত লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এবং আদালতের নজরে আনেন। পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞার এ আদেশ দেন।
আজহারুল্লাহ ভূঁঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘বই দুটি নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিষয়টি আমাকে অবগত করায় আমি হাইকোর্টের নজরে আনি। বই দুটিতে ব্যক্তির ধর্ম বিশ্বাস, ব্যক্তির চিন্তা এবং ব্যক্তির পোশাক পরিধানের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হয়েছে।’
এদিকে গ্রন্থমেলার নীতিমালার ৭.১ ধারা লঙ্ঘন করায় গত মঙ্গলবার রাতে ২৩ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাংলা একাডেমি।
নীতিমালা লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো জয়বাংলা, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, জয় বাংলা আর্ট গ্যালারি অ্যান্ড স্টুডিও, মাইক্রোস ডিজিটাল, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন, শিশু সাহিত্য বইঘর, ছোটদের জ্ঞান বিজ্ঞান একাডেমি, ছোটদের মেলা, জনতা প্রকাশ, বাঁধন পাবলিকেশন্স, কালিকলম প্রকাশনা, নবরাগ প্রকাশনী, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ স্মৃতি সংসদ, আলগাজী পাবলিকেশন্স, আবিষ্কার, শিশু-কিশোর প্রকাশন, মুক্ত প্রকাশ, শিশু প্রকাশ, কালধারা, মৌ প্রকাশনী, মেধা পাবলিকেশন্স, নিহাল পাবলিকেশন, অভ্র প্রকাশ।
অমর একুশে গ্রন্থমেলার নীতিমালা ও নিয়মাবলির ৭.১ ধারায় রয়েছে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকগণ কেবল বাংলাদেশে মুদ্রিত ও প্রকাশিত বাংলাদেশের লেখকদের মৌলিক/অনূদিত/সম্পাদিত/সংকলিত বই বিক্রি করতে পারবেন। অথচ এ ধারা লঙ্ঘন করে মেলায় বিদেশি লেখকদের শত শত বই প্রকাশ ও বিক্রি করছেন অনেক প্রকাশক। তাই গ্রন্থমেলার নীতিমালা লঙ্ঘন করায় এসব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে গ্রন্থমেলার টাস্কফোর্স উপকমিটি।
মেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমদ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছেÑ এসব প্রতিষ্ঠান নীতিমালা ও নিয়মাবলি ৭.১ ধারা লঙ্ঘন করেছে। গ্রন্থমেলার টাস্কফোর্স উপকমিটি একাধিক দিন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর কথাও বলা হয়েছে।
Discussion about this post