লালমনিরহাটে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে অপহরণ হওয়া শিক্ষিকার স্বামী বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষকসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী (৪০) সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খোরাগাছ গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী দীর্ঘ দিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বিষয়টি ওই শিক্ষিকা তার স্বামীকে জানালে খায়রুল আলমকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু এতেও তার আচরণ সংশোধন হয়নি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাঞ্জুমা আক্তারের সহায়তায় ওই সহকারী শিক্ষিকাকে ফিন্নির সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ান খায়রুল আলম। এতে অসুস্থ হলে ওই সহকারী শিক্ষিকাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে চিকিৎসা করান তার স্বামী।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাঞ্জুমার কাছে বিচার চেয়েও কোনো সুফল পাননি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা। এরপর গত বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষিকার স্বামী বাজারে অবস্থান করায় স্কুল শেষে বাড়িতে একাই ছিলেন তিনি। এ সুযোগে খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী ওই বাড়িতে গিয়ে পুনরায় চেতনানাশক ওষুধ সেবন করিয়ে শিক্ষিকার বাড়ির স্বর্ণালঙ্কার, নগদ পৌঁনে চার লাখ টাকা ও শিক্ষিকার যাবতীয় কাগজপত্রসহ ওই শিক্ষিকাকে নিয়ে পালিয়ে যান।
পরে বাড়ি ফিরে ওই শিক্ষিকার স্বামী স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, তার স্ত্রীকে গাড়িতে করে নিয়ে গেছেন খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী। অপহরণকারী শিক্ষক সবুজ পাটোয়ারীর বাড়িতে গিয়েও স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে রাতেই লালমনিরহাট সদর থানায় চারজনকে আসামি করে স্ত্রীকে অপহরণের দায়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, শিক্ষক খায়রুল আলম সবুজ পাটোয়ারী, তার বাবা মো, আবুল কাশেম পাটোয়ারী, ভাই মো. ফিরোজ ও প্রধান শিক্ষিকা মাঞ্জুমা আক্তার।
লালমনিরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এরশাদুল হক বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। তবে এখন পর্যন্ত উভয় শিক্ষকের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। তবে কেউ লিখিত ভাবে অবগত করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Discussion about this post